চাকুরি ছেড়ে ব্যবসা: গল্পকেও হার মানানো বাস্তবতা

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ফুড ডিভিশনে মামুনুর রশিদ কাজ করেছেন ৬ বছরের বেশি, স্ত্রী আমিনা মাস্টার্স শেষ করার পর আর চাকুরির পেছনে ছোটেননি। মামুনুরকে উদ্বুদ্ধ করেছেন অন্যের প্রতিষ্ঠানের জন্য মেধাক্ষয় না করে নিজে উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে। স্ত্রীর অনুপ্রেরণায় একদিন ফেসবুকে এফ-কমার্সে ট্রেডিশনাল দোকানের পথচলা শুরু মামুনুর-আমিনা দম্পতির হাত ধরে।

রাধজানীর আগারগাঁওয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও ঐক্য ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘হলিডে মার্কেট’-এ চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে কথা হয় মামুনুরের।

তিনি জানালেন, ট্রেডিশনাল দোকানের কনসেপ্টটা আমার স্ত্রীর।তার ধারণা ছিলো আমি চাকুরির পেছনে ছুটবো না। মাস্টার্স শেষ করার পর কখনই চাকুরির পেছনে ছোটে নাই। সে সব সময় ভাবতেন কীভাবে রাজধানীর মানুষের কাছে গ্রামের ঐতিহ্যবাহী খাবারের স্বাদ তুলে দেওয়া যায়-সেই চিন্তা থেকেই আমাদের ট্রেডিশনাল ফুড বিজনেসে আসা।

ফেসবুকে ভালো সাড়ার পর মামুনুর ছেড়েছেন চাকুরি। পুরোটা সময় মনোনিবেশ করছেন ব্যবসায়। সফলতাও পাচ্ছেন হাতেনাতে।

হলিডে মার্কেটের দোকানটিতে দেখা গেলো: গরু দিয়ে টানা ঘানীর সরিষার তেল, উত্তরবঙ্গের নওগাঁর কুমড়া বড়ি, কুষ্টিয়ার হাতে ভাজা মুড়ি, দিনাজপুরের চিনিগুড়া চাল, শেরপুরের তুলসি মালা চাল, হাতে তৈরি আখের চিনিসহ হরেক রকম গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খাবারের সমারোহ।

এ প্রসঙ্গে মামুনুর বলেন: ভালো খাবারটা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চিন্তা থেকেই আমাদের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা। আমাদের আজকের এ অবস্থানের পেছনে সব থেকে বড় অবদান আমার স্ত্রীর। গত তিন মাস ধরে। ফেসবুক থেকে শুরু এরপর হলিডে মার্কেটে আসা। প্রোডাক্ট সোর্সিং করাটা এক্ষেত্রে বেশ বড় ব্যাপার। আমাকে এখন নিজে গিয়ে দেখতে হচ্ছে যে প্রোডাক্টটি অথেন্টিক কিনা। এই নিশ্চয়তাটা আমাদের নিজেদের মধ্যে আসতে একটু সময় লাগছে।

‘‘তবে এখন পর্যন্ত আমরা যে প্রোডাক্টগুলো বিক্রি করেছি তার রিভিউ খুব ভালো। যার কারণে আমরা রিপিট কাস্টমার পাচ্ছি।’’

চাকুরি ছেড়ে এফ-কমার্স উদ্যোক্তা হওয়ার ঝুঁকিসহ সার্বিক বিবেচনায় প্রথম দিনগুলো কেমন ছিলো জানতে চাইলে মামুনুর বলেন: ঝুঁকি ছিলো ঠিক, সবসময় সাহস জুগিয়েছে- আমার স্ত্রী। তবে এতটুকু বলতে পারি এখন ভালো আছি। সংসার চালাচ্ছি, নিজেদের ভবিষ্যতের জন্য জন্য কাজ করছি।

হলিডে মার্কেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন: মেলায় সমাগম বেশ ভালো। হলিডে মার্কেটের যে কনসেপ্টটা, সেখানে রুটলেভেল থেকে প্রোডাক্ট কালেক্ট করে কাস্টমারের হাতে তুলে দেওয়া। কিন্তু এখানে ট্রাস্টের একটা বিষয় আছে। অনেকে এখানে ঘুরতে আসেন, আবার রিপিটেড কাস্টমারও পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের আগে বিশ্বাস গড়ে তুলতে হবে। এর জন্য আরও কিছুটা সময় হয়তো দরকার হবে। ট্রাস্টের জায়গাটা তৈরি করতে পারলে হলিডে মার্কেটের কনসেপ্টটা পূর্ণতা পাবে।

Capture 5

হলিডে মার্কেটকে অনেকে মেলা বলে মনে করছেন বলে মন্তব্য করেন এ উদ্যোক্তা। তার বক্তব্য: হলিডে মার্কেটের কনসেপ্টটা মানুষের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারলে একসময় ঘুরতে আসা ভাসমান কাস্টমাররাও এ মার্কেটের পার্মানেন্ট কাস্টমারে পরিণত হবে।

নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন: যারা আমার ট্রেডিশনাল দোকানের কাস্টমার হয়েছেন তারা রিপিটেড কাস্টমার হয়ে গেছেন। দেড় মাসে তারা বারবার আসছেন। যেটা আমার জন্য ভালো। এই হলিডে মার্কেটের মধ্যদিয়েই আমরা এই কাস্টমার বেজটা তৈরি করতে পেরেছি।

তার পণ্যগুলো নিজের আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে কালেক্ট করা বলে জানান মামুনুর। বলছেন: কোনটা তৈরি করেন তার ভাই আবার কোনটা তার মামী, যারা বিভিন্ন জেলায় বসবাস করেন। তাদের হাত ধরেই ট্রেডিশনাল দোকান প্লাটফর্ম গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খাবার সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন মামুনুর-আমিনা দম্পত্তি।

News Source: Uddokta Barta

oikko@dmin

Contact Us

09678 366666 (10 AM to 6 PM)

266, West Nakhalpara,
Tejgaon, Dhaka

Be Connected With Us

© 2022 All Rights Reserved by Oikko Foundation, Bangladesh